কাচালং বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
KACHALONG GIRLS' SCHOOL

ঠিকানাঃ উপজেলা সদর, ডাকঘর: বাঘাইছড়ি,উপজেলা: বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।

বিদ্যালয় কোডঃ 0401051301, EIIN: 107678,

বিদ্যালয় পরিচিতি

কাচালং বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।

EIIN: 107678

-মেইলkghsb1993@gmail.com

মোবাইল: ০১৫৫২৭১০৬২৯, ০১৮২০৪২৯৩৮১

-----------------

১। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পটভূমি

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সবচেয়ে দূর্গম, পশ্চাৎপদ সীমান্তবর্তী এলাকা বাঘাইছড়ি উপজেলা জেলা সদর থেকে এটি প্রায় ১৫০ কিঃমিঃ উত্তরে যার আয়তন ৭০৩ বর্গমাইল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই নামক স্থানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য বাঁধ নির্মিত হলে জলনিমগ্ন  হাজার হাজার উদ্ভাস্ত মানুষকে পুনর্বাসনের জন্য ১৯৫৯১৯৬০ সালে কাচালং সংরক্ষিত বনভুমি সরকারীভাবে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সে সুবাদে সীমাহীন ঝুঁকিপূর্ণ শ্বাপদসংকুল গহীন দূর্ভেদ্য প্রাকৃতিক অরণ্যাঞ্চল সাফ করে সর্ববস্বান্ত মানুষ কাচালং উপত্যকায় নতুনভাবে একটি জনপদ সৃষ্ট করে যা পরবর্তিতে  বাঘাইছড়ি উপজেলা নামে খ্যাত হয়  

ঐতিহ্যগতভাবে বাঘাইছড়ি এলাকার মানুষ শিক্ষার ব্যাপারে অতিশয় উৎসাহী স্থায়ী আবাসভূমির সমস্ত রকমের  জায়গা-জমি জলনিমগ্ন হলেও পূনর্বাসিত এলাকায় নতুন জীবনের সন্ধানে নতুন রূপে তাঁদের কঠোর জীবন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিজ নিজ সন্তান-সন্ততিকে সাধ্যমত শিক্ষার আলো প্রদানে প্রানান্ত চেষ্টা চালায় যথোপযুক্ত শিক্ষায় মনোনিবেশের ফলে একপর্যায়ে এলাকার অনেক সন্তান দেশে-বিদেশে, সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নানা অধস্তন উর্ধবতন পদে তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত করে  রাষ্ট্রীয় সেবায় যার যার অবদান অক্ষুন্ন রাখে কিন্ত উচ্চ শিক্ষার অগ্রযাত্রায় কেবল ছেলেদের বিচরণ বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় ছিল ক্ষেত্রে  নানান সীমাবদ্ধতার কারণে পুরুষদের চেয়ে নারীদের অগ্রগতি ছিল অত্যন্ত মন্থর ফলে শিক্ষায় সুষম বিকাশের লক্ষ্যে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ শিক্ষানুরাগী আপামর জনতা ছেলেদের পাশাপাশি বাঘাইছড়ি এলাকায় নারী শিক্ষার প্রসারের আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালায়  

সুদীর্ঘকাল পরে এমন এক পর্যায়ে  বিগত ১৯৯২ খ্রিঃ তদানীন্তন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সকারের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বাঘাইছড়ি থানা সদরের কেন্দ্রস্থলে কাচালং নদীতে বহুল প্রত্যাশিত কাচালং ব্রীজ নির্মাণ কাজ হাতে নেয় যার মাধ্যমে বাঘাইছড়ি এলাকার উন্নয়নে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হয় এবং সারাদেশের সাথে বাঘাইছড়ি এলাকার প্রথম সড়ক যোগাযোগ সুচিত হয়। নির্মাণকাজ সমাপন পরবর্তী বিগত ০৬/১১/১৯৯২ খ্রিঃ তৎকালীন মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী লেঃ কর্ণেল(অবঃ) জনাব অলি আহম্মদ(বীর বিক্রম) প্রধান অতিথি হিসেবে কাচালং ব্রীজ উদ্ভোধন করেন অনুষ্ঠানের সে সুযোগে এলাকার সর্বস্তরের সামাজিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দলমত নির্বিশেষে মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে বাঘাইছড়ি এলাকায় একটি স্বতন্ত্র বালিকা বিদ্যালয়  প্রতিষ্ঠার  বহুল প্রত্যাশিত দাবী তুলে ধরেন  

দাবীর স্বপক্ষে যৌক্তিক বাস্তবতা উপলদ্ধি করে মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী লেঃ কর্ণেল জনাব অলি আহম্মদ(বীর বিক্রম) সর্বস্তরের জনতার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে তদানীন্তন স্থানীয় সরকার পরিষদ, রাঙ্গামাটির মাননীয় চেয়ারম্যান বাবু পারিজাত কুসুম চাকমাকে বাঘাইছড়িতে একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন পাশাপাশি প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তাঁর পক্ষ থেকে সকল প্রকার আন্তরিক সহযোগিতা প্রদানের দৃঢ় আশ্বাস ব্যক্ত করেন অতঃপর  মাননীয় যোগাযোগমন্ত্রী তদানীন্তন স্থানীয় সরকার পরিষদ, রাঙ্গামাটির মাননীয় চেয়ারম্যান বাবু পারিজাত কুসুম চাকমা, সম্মানিত সদস্য, রাঙ্গামাটি স্থানীয় সরকার পরিষদ বাবু উদয় রবি চাকমার পৃষ্ঠপোষকতায় এবং জনাব শামসুল হুদা, সাবেক চেয়ারম্যান, রুপকারী ইউনিয়ন পরিষদ, বাঘাইছড়ি, জনাব আজিজুর রহমান আজিজ, তৎকালীন চেয়ারম্যান, মারিশ্যা ইউনিয়ন পরিষদ, বাঘাইছড়ি, বাবু দয়াল কুমার চাকমা, তৎকালীন ম্যানেজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, বাঘাইছড়ি, জনাব আব্দুল হাকিম, বাজার চৌধুরী, মারিশ্যা বাজার, বাঘাইছড়ি, বাবু দীপ্তিমান চাকমা, চেয়ারম্যান, বাঘাইছড়ি ইউনিয়ন, বাবু কপিলেশ্বর চাকমা, প্রধান শিক্ষক, উলুছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জনাব হাফেজ আহম্মদ, সওদাগর, কাচালং বাজার, বাঘাইছড়ি, জনাব আলী হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান, রুপকারী ইউনিয়ন পরিষদ, বাঘাইছড়ি(বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখা)সহ অনেকে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে এলাকায় নারীশিক্ষা অগ্রগতির পথে অনন্য এক ইতিহাস রচনা করেন   

প্রস্তাবিতকাচালং বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার কাজ ত্বরান্বিত করণের লক্ষ্যে বাবু সুমতি রঞ্জন চাকমা, সহকারী শিক্ষক(অবঃ), উলুছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় তাঁর নিজ নামীয় .৫০ একর জমি দানসূত্রে বিদ্যালয়ের নামে রেজিষ্ট্রিভুক্ত করে বিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভের পথ উন্মুক্ত করেন। পাশাপাশি তৎকালীন সম্মানিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ আবুল বাশার সরকার তৎপরবর্তি সম্মানিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ মোশারফ হোসেন বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অবশিষ্ট জমি ক্রয়ের অর্থ সংগ্রহে বিশেষ অবদান রাখেন প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, উদ্যোক্তাগণের মধ্যে বাবু পারিজাত কুসুম চাকমা, জনাব শামসুল হুদা, বাবু কপিলেশ্বর চাকমা, জনাব আব্দুল হাকিম, জনাব হাফেজ আহম্মদ সওদাগর ইতোমধ্যে পরলোক গমণ করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরলোকগত সে সব পূজনীয় সজ্জনমন্ডলীর পবিত্র আত্মার সদগতি কামনা করছে।